দাখিল পরিক্ষার্থী সুরাইয়া সুলতানা অফি (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী আজ আত্নহত্যা করেছেন

 আত্নহত্যা ও প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয়--

আজকের ঘটনাবলির আলোকে --
দাগনভূইয়া সদর ইউনিয়ন দক্ষিন করিমপুর ছিদ্দিক মেম্বার নতুন বাড়ির আবু সুফিয়ান এর ছোট মেয়ে হোসাইনিয়া মাদরাসার দাখিল পরিক্ষার্থী সুরাইয়া সুলতানা অফি (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী আজ আত্নহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।


স্থানীয়দের তথ্যমতে জানা যায়, মেয়ের বাবা আবু সুফিয়ান থাকেন ওমানে। ৩ সন্তানের মধ্যে ২টি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান (প্রবাসি) এবং স্ত্রীসহ তার সংসার। অফি ভাইবোনের মাঝে ছোট। মাসখানেক পূর্বে তালতলি এলাকায় চাকুরীজীবী এক ছেলের সাথে বিবাহ হয় ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী যাকে বলে (এজাব) তবে কাজি রেজিষ্ট্রি করেননি বয়স কাভার করেনি বিধায়। কথা ছিলো পরিক্ষার শেষে এবং বয়স পরিপূর্ণ হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে। এদিকে অফি এবং মাসহ থাকেন একা নতুন বিল্ডিং করা বাড়িতে। সংসারের অনেকটা দেখাশোনা করেন বড় মেয়ের স্বামী। যিনি একজন পেশায় ব্যাবসায়ী। স্থানীয়রা জানান, তারা ছোট পরিবার কারও সাথে ঝগড়াবিবাদ বা ঝামেলাও নেই। মেয়েটি যথেষ্ট ভদ্র, ভালো এবং ঠান্ডা মনমানসিকতা প্রকৃতির। তার বিরুদ্ধে কেউ খারাপ কিছু শুনেননি বলেও জানান।
মেয়ের চাচা জানান, তাদের গোপনীয় একটি বিষয় হলো যখন মেয়েকে রেখে কিংবা বাড়ি থেকে মা কোথায়ও গেলে তালা মেরে একটি নিদৃিষ্ট জায়গায় চাবি রেখে যেতো এবং মেয়ে বের হলেও একই কাজ করতো যা আজ তিনি শুনেছেন। মেয়ে অফি ঘরের দরজা দুটির মধ্যে একটিতে তালা মেরে আরেকটিতে ভিতর থেকে লক করে বাড়িতে থাকতেন নিরাপত্তার স্বার্থে। যা মা এবং মেয়েই জানতেন বিষয়টি। আজ সকালে যে ঘটনা ঘটেছিল - পারিবারিকভাবে মা মেয়েসহ নিকটাত্মীয়দের আকিকার একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিলো। মেয়েকে মা বললেন সাথে যেতে। এরই মধ্যে নাকি মেয়ের মানসিকতা পরিবর্তনের কারণে অনুষ্ঠানে যাবেনা বলে মনস্থির করেন। উপায়ন্তর না দেখে মা মেয়েকে রেখে যান সকাল বেলায়। বিকেলে মা ফিরে এসে ঘরে তালা দেখে এদিক সেদিক মেয়েকে খুঁজতে থাকেন কোথায়ও না দেখে ঘরে তালা লাগানো দরজা খুলেন এবং সামনের রুমে দেখতে পান মেয়ে ওড়না পেছানো ফাঁশ দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায়। এরপর জানানো হয় দাগনভূইয়া থানাকে। তাদের ঘরের ঠিক পূর্ব পার্শ্বে তার চাচারা বসবাস করেন। বাড়িটি অনেকটাই নিরিবিলি এবং পাঁকা সড়কের পাশে। প্রথমত একটি মেয়ে কেন আত্নহত্যা করবে? সামনে তার দুটি ভবিষ্যৎ এক দাখিল পরিক্ষার্থী দ্বিতীয়ত বিয়েতে পদার্পণ। পারিবারিকভাবে তাদের মা মেয়ের চাবি রাখার বিষয়টি কেউ কি জানতেন? একটি চিঠি লিখে গেছেন যেখানে লেখা ছিলো আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ি নয় যদিও আমরা সংবাদকর্মীরা সে চিঠি দেখিনি উপস্থিত লোকদের মুখে শোনামাত্র। একটি আত্নহত্যার পিছনে কারণ থাকে কিন্ত সে কারণটা কি হতে পারে প্রশ্ন অজানা। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে কি আসবে দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনতে হবে সবাইকে। কিন্ত আত্নহত্যার মুল কারণ বের হওয়া উচিত। আত্নহত্যার প্ররোচনাকারি ও একধরনের অপরাধি। এ ঘটনায় তার পরিবার তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারের সমস্ত কল লিষ্ট চেক করা, কল রেকর্ড করা, সর্বশেষ কার সাথে কথা হয়েছে সবকিছুই আইনের সহযোগিতা নেয়া প্রয়োজন মনে করি। আত্নহত্যা সমাধান নয় কিন্ত আত্নহত্যার সঠিক কারণ উদঘাটন প্রয়োজন। যেগুলো অনেকটাই আড়ালে থেকে যায় পরিবারের অসম্মতি ও আইনি জটিলতার ভয়ে। অনেকেই বলেন এতসব ঝামেলায় যেতে চাইনা যা হবার হয়ে গেছে। এভাবে আর কত ঝরবে অকাল অপমৃত্যু?? সবার জন্য আত্নহত্যা নামক শব্দটি মঙ্গলজনক নয়। তবে প্রশাসনকে এ আত্নহত্যার মুল কারণটা উদঘাটন করার অনুরোধ জানান স্থানীয় সর্বসাধারণ।

Post a Comment

0 Comments