এবার মা হাত ধরে টান দিলো কিন্তু আমার হাত পুরো শরীর নিয়ে নড়ে উঠলো। শরীর আমার পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে গেছে।

এবার মা হাত ধরে টান দিলো কিন্তু আমার হাত পুরো শরীর নিয়ে নড়ে উঠলো।

শরীর আমার পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে গেছে।



রাতে মায়ের হাতে রান্না করা খাবার খুব মজা করে খেয়ে রাত ১০টায় ঘুমিয়ে গেলাম.

সকাল গেলো ঘুম থেকে উঠলাম না আরামে ঘুমাবো বলে মা ডাকলো না.

দুপুর হয়ে গেলো ঘুম থেকে উঠলাম না.


এবার মা অনেক ডাকলো আমি উঠলাম না।

মা চলে গেলো।

একটু পর আবার আসলো।

এবার অনেক ডাকার পরেও না উঠায় মা অনেক বকলো আমি তাও উঠলাম না। এইবার মা একটা থাপ্পড় দিলো।

তাও উঠলাম না।


এবার মা হাত ধরে টান দিলো কিন্তু আমার হাত পুরো শরীর নিয়ে নড়ে উঠলো।

শরীর আমার পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে গেছে।

মা কিছু না বলে চুপ করে রুম থেকে বেরিয়ে বাবাকে ডেকে নিয়ে আসলো।

কিন্তু বাবা অনেক ডাকার পরও আমি উঠলাম না।

এইবার বাবা চোখের জল ফেলে বলছেঃ উঠে আয় তোকে আর কোন দিন কিছু বলবো না।

যেমন করে থাকতে চাস থাক।

তাও উঠে আয়।

তোকে আজকেই ল্যাপটপ কিনে দিবো।


আমি অবাক হয়ে দেখছি বাবা এতো করুণা করে কোনোদিন আমাকে বলে না অথচ আজ বলছে।

আমি উঠে আসতে চাচ্ছি কিন্তু কিছুতেই উঠতে পারছি না।

এদিকে বাবা নানান রকম লোভ দেখিয়ে বলছে উঠে আসতে।

একটু পর আমার বাড়িতে অনেক মানুষ চলে আসলো।


ওদিকে মা কাঁদছে কেউ মাকে স্বান্ত্বনা দিচ্ছে কেউবা বাবাকে কেউ ভাই বোনকে নানান কথা বলে বুঝাচ্ছে।

একটু পরেই কয়েকজন এসে আমাকে খুব যত্ন করে বিছানা থেকে নামিয়ে লোহার শক্ত খাটিয়াই শুইয়ে দিলো।


আমি কাঁদছি আর বলছি আমার পিঠে খুব ব্যাথা লাগছে নামাও এখান থেকে।

কেউ আমার কথা শুনলো না।

একটু পর ঐ মানুষ গুলো গরম পানি নিয়ে এসে আমার শরীরে কিছুটা পানি ডেলে দিলো।

ঈশ আমার শরীর পুড়ে গেলো বলে চিৎকার করছি কেউ কথা শুনছে না আমার। আমাকে পরম যত্নে গরম পানি দিয়ে খুব সুন্দর করে ডলে ডলে ধুঁইছে।


আমি কাঁদছি আর বলছি আমাকে আর গরম পানি দিয়ো না,শরীর পুড়ে যাচ্ছে। আমায় আর ডলা দিয়ো না।

খুব ব্যাথা লাগছে কেউ শুনলোনা।

অনেক সময় নিয়ে গোসল করিয়ে আমার শরীর ভালো করে মুছে নিয়ে আসলো আমার বসার জায়গাতে। 


আমি খুব খুশি হলাম ভাবলাম আমাকে এইবার এখানে বসাবে।

কিন্তু ওরা আমাকে না বসিয়ে কাঠের শক্ত একটা খাটে শুইয়ে দিলো।

একটা চাদরও নিচে দিলনা।

একটু পরে মা,বোন আরো কয়জন মিলে আমাকে একটা সাদা কাপড় পড়ালো।

মা অনেক আদর করে আমার মুখে হাত বুলাচ্ছে আর কাঁদছে।

এতো আদর কোনোদিন করেনি মা আমাকে।


আমি অনেক করে বললাম কান্না থামাতে কিন্তু কিছুতেই কান্না থামাচ্ছে না।

আমি এতো করে বলছি কেঁদো না।

মা কিন্তু কিছুতেই শুনছে না আমার কথা । একটু পর কয়েক জন এসে আমার পা আর মাথাটা বেঁধে দিলো কত বললাম একটু খুলে দাও বাঁধন কেউ শুনলো না।


মাকে সরিয়ে দিয়ে আমাকে নিয়ে যেতে লাগলো।মা কিছুতেই নিতে দিচ্ছে না আমাকে।

ভাই বোন সব চুপ হয়ে কাঁদছে আর কিছু বলছে না।

কত করে বলছি ডিস্টার্ব করিস না আমাকে একজনও শুনলো না।

কেঁদেই চলেছে।

একটু বেশি ঘুমালে বাবা বকা দিতো।

কিন্তু এখন বাবা চুপ করে দাঁড়িয়ে চোখের পানি মুছতেছে।

একটা বকাও দিলো না আমাকে।


মাকে জোর করে সরিয়ে দিয়ে কয়েক জন আমাকে নিয়ে অনেক মানুষের সামনে শুইয়ে দিলো একটা ছায়ায়।

তার পরেই জানাজা পড়লো আমার। জানাজা শেষেই নিয়ে গেলো আমায়। একটু দূরেই একটা মাটির গর্ত করে রাখছে।

বাবা আর ভাই, ২ জন মিলে মাটির গর্তে নেমে আমাকে কোলে তুলে নিয়ে ঐ ছোট মাটির গর্তে শুইয়ে দিলো।


একটা বালিশ, চাঁদর কিছু দিলো না।

একটা লাইটও দিলো না।

আমার পা আর মাথার কাছের বাঁধন গুলো খুলে দিয়ে আমার উপর খুব তাড়াহুড়া করে কিছু কাচা বাঁশ দিয়ে ঢেকে দিলো।

তার উপর আরো কি কি দিলো আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।

যতই সময় যাচ্ছে মাটির গর্তটা অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।


আমি চিৎকার করছি আর বলছি এখান থেকে আমাকে বের করো।

আমার খুব ভয় করছে।

কিছু দেখতে পাচ্ছি না।

একটু পরেই আমার উপর মাটি চাপা দিয়ে সবাই চলে যাচ্ছে।

আমি ডাকছি আর বলছি আমাকে একা রেখে যেওনা।

না কেউ শুনল না।

স্বার্থপরের মত সবাই চলে গেলো...!!!


কি ভাবছেন...???

মৃত্যুবরণ করবেন না...???

আরো রং তামাশা করার বাকি আছে...?


আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে ঈমানের সহিত মৃত্যু দান করুন..

আল্লাহুম্মা আমিন!

Post a Comment

1 Comments